জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শ্বশুরের পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুত্রবধূর চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী শিক্ষিকা মাফিয়া খাতুন মিতুর বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ৬১নং মইশাবাদুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।
এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের নাম ব্যবহার করে মাফিয়া খাতুন মিতু চাকরি লাভ করেছেন। আব্দুর রহমান ভাটারা ইউনিয়নের জুলারখুপি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং তার পরিবারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মাফিয়া খাতুন মিতু মুক্তিযোদ্ধার ছোট ছেলে খায়রুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাফিয়া খাতুন মিতু নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় নিজের পিতার নাম (হাসান আলী) পরিবর্তন করে মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুর আব্দুর রহমানের নাম ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্রেও এই নাম ব্যবহৃত হয়, যা তাকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেতে সহায়তা করে। ২০১২ সালে এসএসসি পাস করার পর তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের পরিচয়ে ২০১৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শ্বশুরকে জন্মদাতা বানিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার মতো অনৈতিক কাজের জন্য মাফিয়া খাতুন মিতুকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। স্থানীয়রা আরও বলেন, একজন শিক্ষিকা যিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে চাকরি নিয়েছেন, তার কাছ থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কী শিখবে, তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম খোরশেদ বলেন, “মিতু আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। আমার পিতার নাম কিভাবে সে ব্যবহার করেছে, তা আমার জানা নেই। আমার বাবা তার জন্মদাতা হতে পারেন না।”
অভিযুক্ত শিক্ষিকার স্বামী খায়রুল ইসলামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। একইভাবে, অভিযুক্ত শিক্ষিকা মাফিয়া খাতুনও সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।
মইশাবাদুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, “তার চাকরির বিষয়টি আমি জানি না, তবে তার যোগদানপত্র আমাদের কাছে রয়েছে।”
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাহিদা ইয়াসমিন জানান, “আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষিকার সব কাগজপত্র সংগ্রহ করে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”