মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস ২০১৪ সালে এমপি হওয়ার আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্টই ছিল না। তবে এমপি হয়ে ১০ বছরে তিনি ও তাঁর স্ত্রী গড়েন সম্পদের পাহাড়। ব্যাংকে কোটি টাকাসহ লাখ লাখ টাকার জমি, বাড়ি ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে এ দম্পতির নামে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ টাকা ভারতে পাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দুই দিন আগে আওয়ামী লীগের এ নেতা পালিয়ে যান ভারতে। এর পর তাঁর সম্পদ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালে কারচুপির অভিযোগ থাকা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমপি হন মৃনাল কান্তি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ভোটে হেরে যান। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তাঁর হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে মৃনাল কান্তির কোনো গাড়ি ছিল না। তবে এমপি হওয়ার পর কোটি টাকার গাড়ি কেনেন। ২০১৮ সালে নিজ অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৬২ হাজার ১৪ ও স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ১৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা থাকলেও ২০২৩ সালে মৃনাল কান্তি নিজের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯১ টাকা দেখান। এ ছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ টাকার ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকার ৭ দশমিক ৫ কাঠা প্লট রয়েছে তাঁর। স্ত্রীর নামে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ১০ দশমিক ৫ কাঠার প্লটের ওপরে ভবন রয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালে স্ত্রীর নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ১৯১ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য দিয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর অভিযোগ, এমপি হওয়ার পর দেদার অর্থ কামিয়েছেন মৃনাল কান্তি। এর একটি বড় অংশ ভারতে পাচার করেছেন। এ ছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগে প্রভাব বিস্তার করতে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের দিনের পর দিন পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে গেছেন তিনি। এ কারণে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবসহ অনেক নেতার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও আগুন দেওয়া হলেও মৃনাল কান্তির কিছুই হয়নি। বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীর বাধায় মুন্সীগঞ্জ শহরে তাঁর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও রয়েছে অক্ষত।