‘রিচার্ড স্কোলিয়ার’- যিনি একজন চিকিৎসক। যে কিনা নিজেই মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত। ক্যানসারে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ান এক চিকিৎসক নিজের আবিষ্কার করা পদ্ধতিতে নিজের চিকিৎসা করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি প্রায় বছর খানেক ধরে ক্যান্সারমুক্ত আছেন।
ইমিউনোথেরাপি পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিলো।
এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে স্কোলিয়ার জানান, আবারও এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে তার মস্তিষ্কের টিউমারটি ফিরে আসেনি। অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে এক ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যা খুবই মারাত্মক। এতে আক্রান্ত রোগীর বেশির ভাগই এক বছরের মধ্যে মারা গিয়ে থাকেন।
চিকিৎসক স্কোলিয়ার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রোগতত্ত্ববিদ। ক্যানসারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চলতি বছর তাকে এবং তার সহকর্মী ও বন্ধু জর্জিনা লংকে ‘অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউট এক দশক ধরে ইমিউনোথেরাপি নিয়ে গবেষণা করছে। এ পদ্ধতিতে শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) ব্যবহার করে ক্যানসার কোষকে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে ক্যানসারের শেষ ধাপে থাকা রোগীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উলেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তির অর্ধেক এখন এ পদ্ধতিতে নিরাময় হচ্ছে। আগে এ হার ১০ শতাংশের কম ছিল।
স্কোলিয়ারের মস্তিষ্কের ক্যানসার নিরাময়ে এ পদ্ধতিই ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক লংসহ চিকিৎসকদের একটি দল। অধ্যাপক স্কোলিয়ার হলেন মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রথম রোগী, যার চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লং এবং তার চিকিৎসকদল গবেষণা করে দেখেছে, কয়েকটি ওষুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইমিউনোথেরাপি দেওয়া হলে তা অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করে।
টিউমার অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। গত বছর স্কোলিয়ারকে অস্ত্রোপচার-পূর্ববর্তী এ থেরাপি দেওয়া হয়। এছাড়া স্কোলিয়ারই হলেন প্রথম রোগী, যাকে টিউমারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিশেষ ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে ওষুধের ক্যানসার শনাক্ত করার ক্ষমতা বেড়েছে।