ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিশ্বের ২৬টি দেশের ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে দুইদিনব্যাপী ‘Computing, Application and systems COMPAS 2025’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনে IEEE কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি ও আইসিটি বিভাগের সমন্বিত আয়োজনে এ সম্মেলন শুরু হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে বিশ্বের ২৬টি দেশের ২৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট অংশ নেয়। এতে ৫১৮ জন লেখকের সর্বমোট ৭৯০টি প্রবন্ধ জমা পড়েছে যেখান থেকে ২৬৪ টি প্রবন্ধ নির্বাচিত হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইবির সেন্ট্রাল ল্যাবের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও আইসিটি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন সৈকত ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মারুফা ইয়াসমিন মিশুর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য ও বুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল রহমান।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস ম্যানেজমেন্টের রেক্টর অধ্যাপক ড. তারিক রহিম সুমরো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক। সম্মেলনে আগামীকাল আলোচক হিসেবে থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা হোসাইন।
সম্মেলনে প্রধান প্রযুক্তিগত ট্র্যাকের মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও সফট কম্পিউটিং; জ্ঞানীয় বিজ্ঞান এবং কম্পিউটেশনাল জীববিজ্ঞান; ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) ও ডেটা অ্যানালিটিক্স; নেটওয়ার্ক সুরক্ষা; সিগন্যাল প্রসেসিং; কম্পিউটার ভিশন; অ্যালগরিদম, গণনা ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, যোগাযোগ, অপটিক্স।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার সায়েন্স সংশ্লিষ্ট যে বিষয় গুলো দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে সেগুলোতে দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে গবেষণা কার্যক্রম এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অত্যন্ত অগ্রসর ও পরবর্তীতে সব ধরনের কাজ মেশিন দ্বারাই পরিচালিত হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে এ বছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে। এ সম্মেলন আমাদের শিক্ষা যাত্রায় একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পরামর্শ দেয়ার প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকারের প্রতীক। এ অর্জন বিশ্বব্যাপী সম্পৃক্ততা ও অ্যাকাডেমিক মান প্রদর্শন করে।
উল্লেখ্য, এ ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক ইভেন্টের মূল টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে সঙ্গে ছিলো IEEE ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ। “IEEE COMPAS ২০২৫” ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবনী যাত্রায় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে। যা শিক্ষাবিদ, গবেষক-প্রযুক্তিবিদদের জ্ঞান ও আবিষ্কারের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।