ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শোকজ ছাড়াই আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলামকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপন ও রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলাম ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকেন। এ বিষয়ে একইবছর ৯ ডিসেম্বর শিক্ষাছুটি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির ১৯৭ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এক মাসের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি যোগদান করেনি। তাছাড়া বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এক বছরের বেশি বিভাগে অনুপস্থিত থাকায়, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলামকে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে, ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত ২৭০ তম সিন্ডিকেট সভার ২৪ নং সিদ্ধান্তের আলোকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৬৭ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অপরাধের মাত্রা নির্ধারণপূর্বক শান্তির ধরণ উল্লেখ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশের আলোকে সর্বশেষ ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৩ (য) ধারা অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪ (১) (২) ধারা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে ড. জহুরুলকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
জানা যায়, এই অধ্যাপক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ডেকোটায় ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি বিষয়ে এমএস ডিগ্রিতে ভর্তি আছেন।
অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি নিজেও জানি না কোন কারণে অনুমতিবিহীন ছুটি বলছে, আমি ৫ বছরের লিভ বন্ড দিয়ে গবেষণার জন্য ইউএসেতে এসেছি এছাড়াও ১ বছর ছুটি ভোগের পর দ্বিতীয় বছরের ৩ মাস অতিক্রান্ত হলে বেআইনী ভাবে প্রশাসন আমাকে ৩/১১/২০২৪ তারিখে ছুটি বাতিল করে যোগদান করতে বলে। আমি পুনরায় দরখাস্ত করলে সে বিষয়ে ১৮/৩/২০২৫ তারিখে চিঠি পাই যে, আমার ছুটির আবেদন মঞ্জুর হয় নি এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বা তদন্ত কমিটি আমাকে কিছুই জানায় নি ও আশা করেছিলাম কর্তৃপক্ষ আমাকে চিঠি দিবে এবং যুক্তিসঙ্গত সময় দিবে। পরবর্তীতে ৩১/০৮/২০২৫ তারিখে পুনঃবিবেচনা কারর জন্য আবেদন দেই এবং ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আবেদন করি কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটা বিবেচনা করেন নি। আমি এখন পর্যন্তও ইউএসেতে শিক্ষা ও গবেষণায় কর্মরত রয়েছি।
তাছাড়া প্রশাসনের পত্রটিও অসঙ্গতিপূর্ণ। তারা বলছে যে, ৯/১২/২০২৪ তারিখের ১৯৭তম স্ট্যান্ডিং কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ৩/১১/২০২৪ পত্রে তাকে যোগদান করতে বলা হয়। এটা কি ঘোড়ার আগে গাড়ী নয়? ‘ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখের সিদ্ধান্ততো আর নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে জানানো যায় না’! “প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত বা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আলোকে আমাকে যোগদানের জন্য কোন পত্র বা শোকজ করা হয়নি।