ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ব্যস্ততম ও শিক্ষার্থীদের আড্ডার অন্যতম স্থান ঝাল চত্বর (আমবাগান)। যেখানে খাবারের হোটেল, চায়ের দোকানের পাশাপাশি রয়েছে হরেক রকম খাবারের কার্ট। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাব এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে কাদা-পানি ও গর্তের সমাহার। ফলে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। হাঁটাচলাতেও চরম ঝুঁকি ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়না চত্বরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের শিক্ষার্থীদের পরিবহন বাসগুলো এইখানে থামে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা এই ঝাল চত্ত্বরের আমবাগান হয়ে ক্লাসে বা খাবারের হোটেল অথবা প্রয়োজনীয় কাজে যায়। কিন্তু এ আমবাগানের রাস্তাজুড়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। এ রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে কর্দমাক্ত অবস্থা। তার উপর রাস্তাটি অনেক পিচ্ছিল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের চলাচলে ভোগান্তি বেড়েই চলছে। এদিকে অনেক সংখ্যক দোকান হওয়ায় তাতে দুর্দশা আরও বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা এই আমবাগান (ঝাল চত্বর) দিয়ে চলাচলকালে প্রায়ই কাদা-পানিতে ভিজে যাচ্ছে জামাকাপড়। তাদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে অসহনীয়।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন, ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন, মীর মোশারফ হোসেন একাডেমিক ভবন ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। শুধু তাই নয় শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ সকাল ও দুপুরের খাবারের জন্য নির্ভর করে আমবাগান (ঝাল চত্বরের) এই দোকানগুলোর ওপর। আবার রাতে শিক্ষার্থীদের আড্ডার প্রাণকেন্দ্রও এই আমবাগান। কিন্তু আমবাগানের রাস্তার বেহাল দশায় সবকিছুই ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।
এ বছর কুষ্টিয়া অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হওয়ায় আমবাগানের রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কোনোভাবে চলাচল সম্ভব হলেও বর্ষায় রাস্তায় কাদা জমে পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়াবহ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তাগুলো এই দুর্দশায় পড়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
স্টেট অফিসের প্রধান মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমবাগান ড্রেন থেকে নিচু হওয়ায় পানি আটকে থেকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ভিসি স্যার ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিষয়টা জানানো আছে। তারা হয়তো বালি আর ইট দিয়ে আমবাগান উঁচু করে সমস্যা সমাধান করবেন।
প্রধান প্রকৌশলী এ. কে. এম. শরিফ উদ্দিন বলেন, বাজেট না থাকার কারণে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না। বিষয়টি আমরা ইউজিসির কাছে জানিয়েছি। বাজেট আসলে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে যে আমবাগানের কিছু কিছু আমগাছ শিক্ষার্থীদের বসার জন্য কয়েকটি গাছের গোড়া ঢালাই করে দেবো এবং পুরো আমবাগান বালু দিয়ে উঁচু করব ও পার্কিং টাইলস দিয়ে দেব যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর ও ট্রেজারার স্যারের সাথে আমার কথা হয়েছে। ইউজিসির সাথে কথা হয়েছে এবং একটি প্রস্তাবনা আছে যতটুকু শুনেছি। বৃষ্টির মৌসুম গেলেই কাজ শুরু হবে। ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কথা হয়েছে, এখন সিলেকশন বালুর উপর ঢালাই বা ইট কি দেওয়া যায় সেটা তারা বলতে পারবে।