রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি পটুয়াখালী বাউফলের ইউএনও।

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম পটুয়াখালী।
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ২৯ Time View

দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির বাউফল উপজেলা সভাপতি ও কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেল ও খবরপত্রের বাউফল প্রতিনিধি এইচ এম বাবলুকে জেলে ভরে শাস্তির হুমকি দিলেন বাউফলের ইউএনও আমিনুল ইসলাম। 

আজ সোমবার বাউফল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে তিনি ওই হুমকি দেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি কারো ফোন ধরাতে বাধ্য না। আমাকে চিঠি দিতে হবে। আমরা প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর যে মালিককে জেলে ভরে শাস্তি দিতে পারি।’ ক্ষমতার অপব্যহার করে ইউএনও আমিনুল ঔদ্ধত্যপূর্ন এ আচরণে উপস্থিত সবাকে হতবিহম্বল করে। 

গতকাল সোমবার ওই বিদ্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন পটুয়াখালী জেলা কার্যালয় ও বাউফল দূর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজন ও বাস্তবায়নে স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডের দিন ক্ষন ধার্য ছিল। ওই কমিটির সভাপতি ও কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আমন্ত্রন জানানোর জন্য বৃহস্পতিবার তাঁর কার্যালয়ে প্রথম যাওয়া হয়। কিন্তু তিনি অফিসে ছিলেন না। এরপর শনি ও রবিবার একই ভাবে তাঁকে আমন্ত্রন জানানোর জন্য প্রতিরোধ কমিটির তার কার্যালয়ে গেলে তখনও তাঁকে পাওয়া যায় নি। ওই তিনদিনই কমিটির সভাপতি তাঁকে ফোন করলেও  তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। সর্বশেষ রবিবার সন্ধ্যার পর তাঁকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন। 

এদিকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম তাঁকে আমন্ত্রন জানালে তিনি সোমবার অনুষ্ঠান স্থালে চলে আসেন। এসেই চটে যান।  

সোমবার বেলা ১২টার সময় বিতর্ক প্রতিযোগীতার শেষ পর্বে অংশ নিতে ওই বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় তাঁকে আমন্ত্রন না দেয়ার কৈফিয়ত তলব করেন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতির কাছে। তাঁর প্রশ্নে জবাবে সভাপতি বলেন, আপনাকে একাধিকবার কার্যালয়ে গিয়ে পাইনি। এমনকি আপনাকে তিনদিন বিভিন্ন সময় ফোন করেছি আপনি রিসিভ করেননি। এতে হঠাৎ করে ইউএনও উত্তেজিত হন। এ সময় তিনি আরও বলেন, আপনারা একটা এ্যারেজমন্ট করতেছেন ইউএনও জানে না আপনারা কিসের এ্যারেজমেন্ট করতেছেন, আশ্চার্য ব্যাপার। ইউএনওকে অবহিত না করে আপনাকে এ আয়োজন করার এখতিয়ার কে দিয়েছে।’ 

এ সময় সভাপতি সোহেল বলেন, ‘আপনাকে আমন্ত্রনের জন্য আপনার কমপ্লেক্সে তিনদিন যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনাকে পাইনি।’ জবাবে ইউএনও বলেন, ‘উপজেলা কমপ্লেক্সে কে গেছে? কমপ্লেক্সে তো কাউয়া বক থাকে। আপনি আমার বাংলোতে গেলেন না কেন? আমার বাংলো একটা অফিস।’ 

এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল বলেন, ‘আপনার বাংলোতে কাউকে ডুকতে দেয়া হয় না। এর জাবাবে ইউএনও বলেন, ‘বাংলোতে যখন এ্যালাউ করবো তখন ডুকবেন।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারী হয়ে মনে করছেন আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারী হয়ে গেছেন। আমি আপনার ফোন ধরতে বাধ্য না। আপনি আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ফোন দিলে আমি ধরবো কেন?’ এ সময় সভাপতি সোহেল বলেন,  ‘আপনি ফোনই ধরলেন না, তা হলে ব্যক্তিগত স্বার্থ, নাকি রাষ্ট্রিয় কোন কাজ বুঝলেন কি ভাবে? আপনি একজন কৃষকের ফোনও ধরতেও বাধ্য।’ এরপর ইউএনও আমিনুল আবার বলেন, ‘আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর মালিককে শাস্তিও দিতে পারি।’ তখন সভাপতি সোহেল বলেন, ‘ক্ষমতা আছে আপনি দেন শাস্তি।’ 

এসময় ইউএনও খবরপত্রের সাংবাদিক এইচ বাবলুকে  তার পিয়ন দিয়ে ভয়ভীতিও দেখায়। ওই সাংবাদিককে দেখা করে সরি বলতে চাপ প্রয়োগ করেন ইউএনওর  গাড়ী চালক। 

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘আমার কাছে এ ব্যাপারে কোন তথ্য এখনও আসেনি তথ্য পেলে মন্তব্য করতে পারবো।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com