কিস্তির টাকা চাওয়ায় স্ত্রীকে কবরস্থানে ডেকে নিয়ে হাঁতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত স্বামী। হত্যার ৪৫ দিন পর ২ ডিসেম্বর আনোয়ারকে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে, মায়ের মৃত্যুর পর থেকে নিহতের দুই বধিঁর সন্তান পরেছে বিপাকে। ঘটনাটি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামের।
গত মঙ্গলবার (৩ডিসেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ সকল তথ্য জানান মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, শামছুল আলম সরকার। তিনি জানান, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির আনোয়ার হোসেন তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে অনেক টাকা উত্তোলন করান। ঋণ দেওয়া এনজিওগুলো কিস্তির টাকা ফেরত নিতে প্রতিনিয়ত নাজমাকে তাগাদা দিচ্ছিল। ফলে নাজমা বেগম তার স্বামী আনোয়ার হোসেনকে কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাঁপ দেয়। এতে আনোয়ার টাকা দেওয়ার কথা বলে গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে কামারখাড়া গ্রামের কবরস্থানের সামনে নাজমাকে ডেকে নিয়ে হাঁতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের পর কবরস্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত নাজমা বেগমকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় নাজমার। পরে এ ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় হত্যা মামলা হয়। বর্তমানে পুলিশ আনোয়ারকে আদালতে নিলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালত তাকে জেলে পাঠায়।
এলাকাবাসী জানান, আনোয়ার হোসেন এলাকায় মাদকসেবি হিসাবেই পরিচিত। সে নাজমাকে বিয়ে করার আগে কমপক্ষে আরো ৫টি বিয়ে করেছে। নাজমাকে তার তিন ছেলে যার মধ্যে দুই জন বধিঁর (যিনি কথা বলতে এবং শুনতে পারেনা-বোবা) ছেলেসহ ফুঁসলিয়ে বিয়ে করে আনোয়ার। বিয়ের পরে নাজমার কোন ভরণ-পোষন দিতো না আনোয়ার, উল্টো নাজমা দিঘিরপার বাজারে বিভিন্ন দোকানে পানি বিক্রি করে নিজেই সংসার চালাতো। এদিকে, নাজমার মৃত্যুতে আয়-রোজগার করতে না পেরে বিপাকে পরেছেন তার বধিঁর দুই ছেলে।