ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশর অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন। ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত বলে গ্রামের নামানুসারে এই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ। প্রতি শুক্রবারে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ধর্মীয় মনবাসনা পূরনের উদ্দেশ্যে আসে। এই জন্য প্রতি শুক্রবারে এখানে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মেলার আয়োজন করা হয়।
ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্যের অন্যতম নজির। জনশ্রুতিতে আছে ইরাকের শাহ সুফি আদারি মিয়া ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আস্তানা তৈরি করেন ও তিনিই এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। স্থানীয়দের ধারণা মসজিদের পাশেই সুফি আদারি মিয়া শায়িত হয়েছেন।
ইতিহাসবিদদের মতে, মসজিদের নির্মাণকাল বিষয়ে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে এ মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। কারণ মুঘল আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে এ মসজিদের নির্মাণশৈলীতে অনেক সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়। মুঘল স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ নির্মিত। মুঘল আমলের বেশিরভাগ স্থাপনার মতো এ মসজিদেও লাল জাফরি ইট ব্যবহার হয়েছে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকাল হিসাব করলে এ মসজিদের বয়স আনুমানিক ৩৫০ বছর।
১৯৬৯ সালে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাতে নথিভুক্ত হয়। বর্তমানে মসজিদটি সরাসরিই বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পরিচালনা ও দেখাশোনা করে থাকে। মসজিদটি নির্মাণে ইট, পাথর, বালি ও চিনামাটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া আছে সুদৃশ্য পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে, চার কোনায় আছে চারটি নান্দনিক মিনার এবং ভেতরে প্রবেশ দরজায়ও দুটি মিনার রয়েছে। এটি অপূর্ব শৈল্পিক কারুকাজসংবলিত একটি স্থাপনা, যা সহজেই মুগ্ধ করে সবাইকে।
বর্তমানে এটি কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত মসজিদগুলোর মধ্যে ইতিহ্যবাহী একটি। প্রতিদিন এখানে শতশত দর্শনার্থী ভিড় করে থাকেন।