আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এই দুর্গা পুজাকে সামনে রেখে কাদামাটি আর খড়-কুটো দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কারিগররা। কাদামাটি আর খড় কুটোয় প্রতিমা তেরিতে কোন কমতি রাখছেন না তারা। নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ শিল্পীদের। গত বছর সিরাজদিখান উপজেলার ১২৬ টি পুজা মন্ডপে দুর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে ১১৬টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের এ দুর্গোৎসব। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের এমন ব্যস্ততা লক্ষ করা গেছে। কারিগরদের সুনিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে এক একটি প্রতিমা। পরম যত্নে তৈরি করা হচ্ছে দেবী দূর্গা, সরস্বতী, লক্ষী, কার্তিক, গণেশ, অসুর ও শিবের প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিমার শারিরীক গঠন তৈরি শেষ হলে রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমার অবয়ব। ফুটিয়ে তোলা হবে নাক-চোখ-মুখ। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তৈরি করা দূর্গার প্রতিমা সমূহে রংতুলির আচড়ের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ রূপে সু-সজ্জিত করা হবে বলেও জানান তিনি। সিরাজদিখান উপজেলার পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জ্ঞান দীপ ঘোষ জানান, ১৪ টি ইউনিয়নের ১৩টি ইউনিয়নে ১১৬টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় ১০ টি কম। বালুচর ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক না থাকায় সেখানে কোন পূজা মন্ডপ নেই। এ বছর চিত্রকোট ইউনিয়নে ২২ টি পূজা মন্ডপ, শেখরনগর ১৬টি, রাজানগর ১০টি, কেয়াইন ২০টি, বাসাইল ৪টি, রশুনিয়া ১০টি, ইছাপুরা ৪টি জৈনসার ৬টি, মধ্যপাড়ায় ৪টি, লতব্দী ৪টি, মালখানগর ১১ টি, বয়রাগাদী ৪টি এবং কোলা ইউনিয়নে ১টি পূজামন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসাহ উদ্দীপনা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে পুজা উদাযাপনের লক্ষে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং করেছি। তারা পুজার নিরাপত্তার দিক দিয়ে যথেষ্ঠ কঠোর ভুমিকার আশ্বাস দিয়েছেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গোৎসব নিয়ে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় চলছে সাজসাজ রব। পূজার আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পূজারি থেকে শুরু করে কর্মব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা।
সিরাজদিখান থানার (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এবার যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে প্রতিমা তৈরী থেকে শুরু করে দুর্গা বিসর্জন পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী টিমসহ প্রশাসনিক নজরদারী জোরদার করার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে। প্রতিটি পূজামন্ডপের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের সাথে কথা হয়েছে। বিভিন্ন পূজামন্ডপে আনসার, পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং প্রতিটি পূজামন্ডপে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল ব্যবস্থাও জোরদার করা হবে।’