নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ‘রান ফর ইউনিটি’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত এই দৌড় প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিযোগিতায় সেরা ৩০ জন দৌড়বিদকে মেডেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহেদুল হক।
এই দৌড় প্রতিযোগিতা সকাল সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকা থেকে শুরু হয়। দৌড় শুরুর আগমুহূর্তে অংশগ্রহণকারীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয়। এ সময় ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’, ‘শিবিরের অপর নাম আদর্শের সংগ্রাম’, ‘এসো নবীন দলে দলে, শিবিরের ছায়া তলে’ এমন নানা স্লোগানে মুখরিত ছিল। স্লোগান শেষে শুরু হয় মূল দৌড়।
প্রতিযোগীরা বাংলা বাজার সংলগ্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে দৌড় শেষ করেন। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে টি-শার্ট,সুপেয় পানি ও গ্লুকোজ প্রদান করা হয়।
ক্যাম্পাসে সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চা ও শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে এই আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি। দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ ধরনের কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের দেহ ও মন প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে এবং পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করে।
দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে উভয়ের অংশগ্রহণে এমন একটি সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজিত হওয়ায় আমি উচ্ছ্বসিত। ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসে এমন সুস্থধারার কার্যক্রম আরও বেশি হওয়া উচিত।’
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের একজন বলেন, ‘আমি নোবিপ্রবি ছাত্রশিবিরকে ধন্যবাদ জানাই এমন প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। ক্যাম্পাসের অন্য সংগঠনগুলোরও উচিত প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে সহমর্মিতার রাজনীতির চর্চা করা এবং এমন শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচির আয়োজন করা।’
আয়োজন সম্পর্কে নোবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ছাত্রসমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। যুবসমাজের মধ্য থেকে হতাশা ও বিষণ্নতা দূর করে, সকাল বেলার আলস্য কাটিয়ে দেহ ও মন গঠনে উদ্বুদ্ধ করতেই আমাদের এই আয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই প্রোগ্রামের মূল বার্তা হলো জাতি গঠনে আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের এই আহ্বানে ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছে, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।’
দৌড়ে ৮০০ প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করা জাহেদুল হক নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে যেকোনো ইভেন্ট আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হতে পেরে আমি গর্বিত। আমি চাই ক্যাম্পাসে এমন প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক।’
তবে উৎসবমুখর এই আয়োজনেও ব্যবস্থাপনার কিছু ত্রুটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে সময়ানুবর্তিতা এবং দৌড় প্রতিযোগিতার সমাপ্তি রেখা অস্পষ্ট থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়েন অনেকে। এ বিষয়ে বিজয়ী জাহেদুল হকও বলেন, ‘আয়োজনটি সুন্দর হলেও সময় সচেতনতা এবং দৌড় ঠিক কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা আগে থেকে সুনির্দিষ্ট না থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আয়োজকদের আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’