বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

সোনাদিয়া দ্বীপে প্যারাবন নিধন: সরকারের জমি দখল করে চলছে চিংড়ি ঘের তৈরির মহোৎসব

মহেশখালী প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১১১ Time View

প্রশাসনের সাম্প্রতিক অভিযানের পরও কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে সরকারের সুরক্ষিত প্যারাবন নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। দ্বীপের পূর্বপাড়ার বরইগাছ তলা এলাকায় প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক শ্রমিক দিয়ে বন উজাড় করে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল চিংড়ি ঘের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড় মহেশখালীর সাবেক ইউপি সদস্য মো. ছফি, সোনাদিয়ার মো. হোসেন, আন্জু মিয়া, ছোট মিয়া ও কুতুবজোমের এক প্রভাবশালী নেতাসহ অন্তত ১৫–২০ জন ভূমিদস্যু এ কাজে সরাসরি জড়িত। তাদের নির্দেশে প্রতিদিন ৫০–১০০ জন শ্রমিককে জনপ্রতি এক হাজার টাকা মজুরিতে এনে গাছ কেটে শুকানো হয় এবং পরে আগুন দিয়ে ফাঁকা জমি তৈরি করা হয়। এরপর বাঁধ তুলে ঘের নির্মাণ চলছে।

সম্প্রতি বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথ অভিযান চালিয়ে তিনটি অবৈধ চিংড়ি ঘের ও অস্থায়ী স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। তবে মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে অল্প সময়ের মধ্যেই দখলদাররা আবারও প্যারাবন কেটে ঘের তৈরির কাজ শুরু করেছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, প্যারাবন ধ্বংস হলে উপকূল ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সরাসরি আঘাতের মুখে পড়বে। একই সঙ্গে মাছ, কাঁকড়া, শামুক ও পাখির আবাসস্থল নিশ্চিহ্ন হবে এবং মাটির স্বাস্থ্যও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আইনজীবী সংগঠন বেলা জানিয়েছে, মহেশখালী ও সোনাদিয়ায় ইতিমধ্যে অন্তত ১০ হাজার একরের বেশি প্যারাবন দখল হয়ে গেছে। বহু মামলা হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিচার হয়নি। তারা দ্রুত অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে বন বিভাগ আবারও অভিযান শুরু করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, শুধু গুঁড়িয়ে দেওয়া নয়, মূল হোতাদের গ্রেপ্তার এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এই দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com