বগুড়ায় শতাব্দী ফিলিং স্টেশনে কর্মরত ক্যাশিয়ার মো. ইকবাল (২৬) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বগুড়া শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এই নির্মম ঘটনা ঘটে। ইকবাল সিরাজগঞ্জের পিপুলবাড়িয়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে এবং বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তার বাড়ি। তবে তিনি শহরের কাটনারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন।
প্রাথমিক তথ্যমতে, ঐ রাতে ইকবাল ও তার সহকর্মী রতন ফিলিং স্টেশনে রাতের শিফটে কাজ করছিলেন। পরদিন রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে দিনের শিফটের কর্মচারীরা এসে ইকবালকে ফিলিং স্টেশনের ক্যাশ টেবিলের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত দেখতে পান। তারা দ্রুত মালিকপক্ষকে জানালে, পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাসির জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইকবালের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়। ইকবালের সহকর্মী রতন পলাতক থাকায় এই হত্যাকাণ্ডের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রতনকে খুঁজছে এবং তার আটক হলে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা সহজ হবে।
এদিকে, ফিলিং স্টেশন থেকে কোনো অর্থ চুরি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনার তদন্তে সিআইডি, পিবিআই ও ডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
ইকবালের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুর পর পরিবারটি এখন গভীর সংকটে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত ও ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।
আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা জনমনে ভীতি সৃষ্টি করলেও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা সামাজিক নিরাপত্তার অভাব এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিফলন।
এই হত্যাকাণ্ডের পর বগুড়ায় অপরাধপ্রবণতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে বলে অনেকে মনে করছেন।