সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায় তাল কুড়ানোকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় ৬ বছরের এক শিশুকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের সড়াতলা গ্রামে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে ৬ বছরের শিশু মো. শাহীন, পিতা মো. মাজেদ খতগীর, বাড়ির পাশে খেলছিল। এ সময় স্থানীয় মো. বাবুলের গাছ থেকে একটি তাল পড়ে যায় এবং শিশুটি তা হাতে নিয়ে নিজের বাড়ির দিকে রওনা হয়। কিন্তু শিশুটি তালটি নিয়ে যাওয়ার সময় বাবুল ঘর থেকে বের হয়ে এসে শিশুটির ঘাড় ধরে চড়-থাপ্পড় দেয় এবং তালটি ছিনিয়ে নেয়।
এরপর বাবুল শিশুটিকে টেনে-হিঁচড়ে মাওলানা রেজাউল করিম কাওছারির পুকুরপাড়ে নিয়ে গিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে শিশুটিকে ডুবে যাওয়া থেকে উদ্ধার করে। এতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় শিশু শাহীন। শিশুটিকে উদ্ধার করার পর তার পরিবার অভিযুক্ত বাবুলের কাছে ঘটনার কারণ জানতে চাইলে বাবুল উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় শিশুর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উল্লাপাড়া মডেল থানার এসআই ছাত্তার জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত বাবুলের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষ বাবুলের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শিশু নির্যাতনের এই ঘটনায় সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি দেখা দিয়েছে। শিশুদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ সমাজে অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। মানবাধিকার কর্মীরা দাবি করছেন, এই ধরনের ঘটনা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কঠোর আইনি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে উঠেছে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।