বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ মির্জা রিয়াদ হাসানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৫৫ Time View

ডাঃ মির্জা রিয়াদ হাসান ১৯৮৪ সালে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার রুহি পাগরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মির্জা ফারুক হোসেন, মাতার নাম ফকরুন নাহার। তিনি ২০০৮ সালে এমবিবি পাশ করেন এবং ২০১৪ সালে ৩৩ তম বিসিএসএ সহকারী সার্জন হিসেবে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন। তার প্রথম যোগাদন তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেই থেকে প্রায় ১২ বছর একই কর্মস্তলে কর্মরত আছেন। মাঝখানে তিনি দূর্নিতির দায়ে অভিযুক্ত হলে ওএসডি হন এবং নবীনগর উপজেলায় বদলি হন। কিছুদিন পর তিনি আবার তাহিরপুর চলে আসেন।

জানা যায়, ২০২১ সালে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি করিয়ে নেন। তাকে এই পদোন্নতি পেতে সহযোগিতা করেন ততকালিন তাহিরপুরের এমপি মোযাজ্জেম হোসেন রতন, উপজেলা চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু বাবুল, ডাঃ সাবরিনা্র ফ্লোরা। পদন্নতি পেয়ে তিনি তাহরিপুর হাসপাতালেই উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। আর এরপর থেকেই তিনি দূর্নতিকে নিজের পেশা হিসেবে ভয়ংকর রুপে হাজির করেন।


তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যত অভিযোগ –


১। তিনি নিজের অফিস রুমে না বসে পুরাতন হাসপাতালের গেইট সোজা একটা রুমে অফিস টাইমে প্রাইভেট প্রাকটিস করেন।রোগী প্রতি ৩০০/২০০ টাকা করে ফি নেন। এর জন্য সে রুমের সামনে কয়েকজন দালাল রাখেন। নতুন হাসপাতালের মূল ফটক আউটডোর সময়ে বন্ধ রাখেন যাতে করে রোগী সরাসরি তার রুমে প্রবেশ করতে পারেন এবং অন্য ডাক্তাররা কোন রোগী দেখতে না পারেন।


২। তিনি হাসপাতালে, তার রুমে সি সি ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছেন, এটা প্রমান করার জন্য যে তার হাসপাতাল এবং তিনি কোন অনিয়ম করেন না। কিন্ত এইসব সিসি ক্যামেরার সব লাইন কাটা।


৩। তিনি কন্টাকে রোগী ভর্তি রাখেন। ৭ দিন থাকলে তাকে জন প্রতি ১০০০ টাকা দিতে হয়ে। বিনিময়ে তিনি রোগী এবং রোগীর লোককে খবার ব্যাবস্থা করে দেন ও সরকারী ঔষধ দেন।


৫। তিনি অফিসের সব স্টাফদের পর্যায়ক্রমে বদলি করে দিছেন। যাতে তার অপকর্মের কোন প্রমান না পাওয়া যায়। হাসপাতালের সব বিল ভাউচার তিনি নিজে করেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন মোঃ পাপন নামের একজন নার্স।


৬। তিনি ডায়েটের টাকা আত্মসাত করেন। হাসপাতালে বেনামে রোগী ভর্তি রাখেন। রোগী যদি থাকে ২০ টা। কাগজ কলমে তিনি দেখান ৫০ টা। এই বাকি ৩০ জনের খাবারের বিল তিনি নিজে তুলে নেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন নার্সিং ইনচার্জ নুসরাত জাহান।


৭। তিনি হাসপাতালের বিছানার চাদর ধোয়ার টাকা আত্মসাত করেন। সপ্তাহে যদি চাদর নষ্ট হয় ২০০ টা। তিনি বিল করান ২০০০ পিসের। এই বাড়তি ১৮০০ পিসের ধোয়ার টাকা তিনি বিল করে আত্মসাত করেন।


৮। তিনি আউট ডোরের টিকিটের টাকা আত্মসাত করেন। আউট ডোরে রোগী যদি প্রতিদিন হয় ৫০০ তিনি কাগজে দেখান ২০০/৩০০। বাকি ২০০ জনের টাকা তিনি সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাত করেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন টিকিট কাউন্টারে যারা থাকে তারা।


৯। তিনি প্যাথলজির টাকা আত্মসাত করেন। প্যাথলজিতে অধিকাংশ রোগীর ইউ্জার ফি’র রশিদ দেওয়া হয় না। যাতে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়া লাগে। এই টাকা তিনি অর্ধেক ভাগ নেন। বাকি অর্ধেক তিনি আউট সোর্সিং কর্মচারি অপু পান।

১০। হাসপাতালের কেনা কাটায় তিনি বড় অংকের টাকা আত্মসাত করেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন মহি উদ্দিন বিপ্লব। (মহিউদ্দিন বিপ্লব একজন sacmo। কিন্তু মির্জা রিয়াদ তাকে ষ্টোরের দ্বায়িত্ব দিয়ে কেনাকাটা করান।আর তাকে দিয়ে অফিস সময়ে প্রাইভেট প্রাকটিস করান। মহিউদ্দিন বিপ্লব হাসপতালের ১৭ নং রুমে বসে প্রাইভেট প্রাকটিস করেন।

১১। ২০২২ সালে তাহিরপুর উপজেলায় কর্মরত ১৩৭ জন এমএইচভি কর্মিদের ১১ মাসের বেতন থেকে মির্জা রিয়োদ জন প্রতি ৩৫০০ টাকা করে মোট ৪,৭২৫০০ টাকা আত্মসাত করেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন হেলথ ইনেসপেক্টর।

১২। ডিজিএইচএ এর স্কোরিং এ তিনি প্রথম হওয়ার জন্য প্রতি মাসে ভূয়া রিপোর্ট আপলোড করেন। যাতে তিনি প্রমোশন পান এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন স্বাস্থ্য সহকারী বিকাশ রঞ্জন তালুকদার ও নার্স মোঃ পাপন মিয়া।


১৩। তিনি হাসপাতালের নার্সদের অনৈতিক প্রস্তাব দেন। যে রাজি হন না তার বেতন বন্ধ করে দেন, এবং নানা ভাবে হয়রানি করেন। তাদের সাথে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। যার ফলে নার্সরা হিনমন্যতায় ভোগেন।


১৪। তিনি যোগদান করার পর বেশ কয়েকজন ভালো মানের ডাক্তারকে বদলি করান। তাদের মধ্যে, ডাঃ নিলুফা ইয়াসমিন, ডাঃ ফয়েজ আহম্মেদ, ডাঃ সুমন বর্মন অন্যতম।


১৫। তিনি তাহিরপুরে ২ টা হাউজবোটরে মালিক । দেশের বাড়িতে রয়েছে বিশাল গুরুর খামার। তিনি বাধাঘাট ডায়গনষ্টিক সেন্টটারের শেয়ার হোল্ডার।


১৬। তিনি আউটসোর্সিং কর্মচারিদের কাছ থেকে প্রতিবছর ৬০-৭০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেন।


১৭। তিনি প্রতিদিন দুপুর ৩ টায় বাধাঘাট চেম্বারে যান। চেম্বারে তিনি সকল রোগীদের ১ সিসি সেফিট্রএক্সন ইনজেকশন, একটা সেলাইন, একটা কিটোরোলাক ইনজেকশন পুষ করেন। প্রায় সব রোগীর একই চিকিৎসা। আর এর বিনিময়ে তিনি ১০০০/১২০০ টাকা রোগী প্রতি নেন।

মির্জ রিয়াদ তিনি বিগত সরকারের আমলে অওয়ামী পরিচয় দিয়ে স্থানিয় লোকজন ও হাসপাতালের স্টাফদের সাথে সবসময় প্রভাব খাটিয়ে চলতেন। কিন্ত ৫ ই আগষ্টের পর তিনি নিজেকে শিবিরের লোক কখনো বিএনপির লোক হিসেবে পরিচয় দেন। স্থানিয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগসাজসে এখনো তাহিরপুরে আছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com