ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন সেক্টরে যে সকল অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে তা ঠিক সেভাবেই এখনও বহাল আছে। সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে তা প্রশাসন বরাবর তুলে ধরা হলেও তা অগ্রগতি হয়নি; উপরন্তু প্রশাসনের নিরবতায় ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের প্রচ্ছন্ন সহযোগীতায় অনিয়মের ডালপালা বিস্তার ঘটছে।
ঠিক এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে ঠাকুরগাঁও রোডের একসময়ের জনপ্রিয় “ছাগল হাট” নিয়ে। একটা সময় ঠাকুরগাঁও রোড এলাকায় বিশাল পরিসরে সপ্তাহে দুদিন করে “ছাগলের হাট” বসতো। বাজার সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় তা একসময় বন্ধ হয়ে যায়। গত ১৪৩০ বাংলা সনে উক্ত হাটের ইজার পান এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ আব্দুল করিম। তিনি সাধারণ মানুষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের সহযোগীতায় ছাগলের হাটটি পুনরায় চালু করেন। এই ছাগলের হাট চালু হওয়ার পরে স্থানীয় গৃহস্থ এবং ক্রেতা সাধারণের ব্যাপক উপকার হয়, কিন্তু বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সেই বাজার সিন্ডিকেটটি পুনরায় অপতৎপরতা শুরু করে এবং বিভিন্ন কৌশলে ঠাকুরগাঁও রোড বাজার ১৪৩১ বাংলা সনের ইজারা নিয়ে নেয়।
কথিত আছে ইজারা নেয়ার পরই বাজার সিন্ডিকেটটি তৎকালীন“পৌর মেয়রকে” টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে ঠাকুরগাঁও রোড বাজার থেকে ছাগল হাট উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং পৌর মেয়রের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় হাট বাজার এর জমি দখলদারদের একজন প্রভাবশালীকে “ছাগল হাট” এর নির্ধারিত স্থানে একটি মার্কেট গড়ে তোলেন। এতবড় একটি ছাগল হাট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন স্থানীয় গৃহস্থ্য, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ ক্রেতারা। আগে যেখানে ঘরের পাশেই তাদের পোষা ছাগল বেচাকেনা পারতেন সেখানে এখন তাদের ভাড়া দিয়ে যেতে হয় বহুদূর এরপরও রয়েছে টোলের যাতনা। রোড বাজারের ছাগল হাটে যেখানে টোল নেয়া হতো ৮০ টাকা সেখানে এই “ছাগল হাট বন্ধ” করে বিভিন্ন বাজারে ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করছে সেই চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি। ছাগল হাট বন্ধ হওয়ার পর অনেক গৃহস্থ্য/পাইকার তাদের ছাগল নিয়ে রোড এলাকার যত্রতত্র বসে পড়ছেন। এমতাবস্থায় ঠাকুরগাঁও রোড বাজারে ছাগলের হাট পুনঃস্থাপন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং বিষয়টি লিখিতভাবে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রশাসককে জানানোর পরেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পৌর সভার প্রশাসক সাহেবকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আশানুরূপ জবাব দিতে পারেন নি। তবে আর কতদিন এই দেখার কাজ চলবে তা তিনি জানাননি বা সাধারণ মানুষও জানেন না। সাধারণ মানুষ মনে করে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের ভূত এখনও প্রশাসনের ঘাড়ে চেপে বসে আছে, এর ফলেই সংস্কারের কোন কাজেই গতি আসছেনা। ঠাকুরগাঁও রোড এলাকার সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে ঠাকুরগাঁও রোড বাজারে“ছাগল হাট” পুনর্বহালের জোর দাবি জানান।