সরকারি ভাবে ইলিশ শিকার, সংরক্ষণ, বিপণন, ক্রয় করা নিষিদ্ধ থাকলেও মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মাপাড়ের চিত্র একটু ভিন্ন। নদী থেকে সদ্য ধরে আনা তাজা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তাও নদীর পাড়েই। আর তা কিনতে দূর্গম চরাঞ্চলে ছুটে আসছেন সাধারণ ক্রেতারা! অনেকটা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নিষিদ্ধ মৌসুমে গড়ে উঠা অস্থায়ী ইলিশের হাটে। শিবচরের পদ্মানদী বেষ্টিত বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ে এভাবেই বিক্রি হচ্ছে প্রতিনিয়ত ইলিশ মাছ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,’এসময় পদ্মার পাড়েই মাছের হাট বসে। পদ্মা নদীর ৪/৫ টি স্থানে প্রতিদিন ভোর এবং বিকেলে বিক্রি হয় ইলিশ মাছ। দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ কিছুটা সস্তায় তাজা ইলিশের প্রলোভনে কিনতে ছুটে আসেন পদ্মাপাড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মানদীতে উপজেলা মৎস্য অফিস, প্রশাসন, নৌপুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। সময় ভাগ করে একাধিক টিম পদ্মায় অভিযান পরিচালনা করছেন। জেলে আটক সহ জব্দ করা হচ্ছে লাখ লাখ মিটার কারেন্ট জাল। গত ৬ দিনে পদ্মানদীতে অভিযান চালিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস ও নৌপুলিশ কমপক্ষে ৫ লক্ষাধিক মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করেছে। এছাড়াও ট্রলার জব্দ, জেলে আটক, জরিমানা এবং মা উদ্ধারও হচ্ছে। তবে নদীতে অভিযান চলমান থাকলেও পদ্মার পাড়ে বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও বসেছে ইলিশের হাট! এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা মাছ ধরে এনে নদীর পাড়ে বিক্রি করছেন। মাছ বিক্রির খবর পেয়ে ব্যাগ নিয়ে নারী-পুরুষেরা ছুটছেন পদ্মার পাড়ে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘বন্দরখোলা ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে পদ্মারপাড়ের কাজিরসূরা এলাকাতে। নদীর চরাঞ্চলের এই এলাকাটি বেশ দূর্গম বলা চলে। নদীর পাড়ে একের পর এক ট্রলার এসে ভিড়ছে। ট্রলারে বসেই বিক্রি করছেন জেলেরা। নদীর পাড়েও মাছ নিয়ে সারিবদ্ধভাবে বসেছেন বিক্রেতারা। দরদাম করে মাছ কিনছেন সাধারন মানুষ। দাম বেশ কমই। আকার ভেদে ৩শত থেকে ৪শত টাকা কেজি থেকে শুরু মাছের দাম। বড় মাছগুলোর বেশির ভাগই ডিমে পূূর্ণ! দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ আসছেন মাছ কিনতে। দাম কম হওয়ায় বেশি পরিমান মাছ কিনছেন একেকজন। ১ কেজি পরিমান মাছ নদীর পাড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২শত/১৩ শত টাকায়! দরদাম করে ক্রেতারা সুবিধা মতো মাছ কিনতে পারছেন এখানে।’
এসময় স্থানীয়রা বলেন,’রাতে ধরা মাছগুলো ভোর থেকে বিক্রি হয়। ফজরের আযানের পরপরই মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। সকাল ৮/৯ টার মধ্যে সকালের হাট ভেঙে যায়। এরপর দিনে যে মাছ ধরা হয় তা নিয়ে আছরের পর বেচা-কেনা শুরু হয়। চলে রাত ৮/৯ টা পর্যন্ত। এছাড়াও পদ্মানদীর বিভিন্ন চর এলাকায় রাতেও মাছ পাওয়া যায়। তবে অভিযানের কারণে চরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মাছ বিক্রি করেন জেলেরা।’