নানা অনিয়ম ও অপেশাদার আচরণের অভিযোগে মুন্সীগঞ্জে শহরের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলের (এভিজেএম) বিতর্কিত সহকারি শিক্ষক মনোরঞ্জন সূত্রধরের শাস্তি ও অপসারণের দাবীতে আবারো জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর একটার দিকে জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপনের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসক জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইসমাইল হোসেনকে ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া (এভিজেএম) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন শিক্ষক মনোরঞ্জন ধর। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের ভিডিও করে আন্দোলন প্রতিহত করতে আসা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ- যুবলীগ নেতাকর্মীদের কাছে পাঠান। পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত।
এছাড়াও, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এসব অপেশাদার আচরণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক বরাবর এর আগেও লিখিত অভিযোগ দেন। পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হলেও ওই শিক্ষক দলীয় ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে সবাইকে প্রভাবিত করে পার পেয়ে যান।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবম, দশম ও সাবেক শিক্ষার্থীদরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মনোরঞ্জন সূত্রধর আওয়ামী লীগের রাজনীতি সাথে জড়িত। তিনি এর সুবাদে কোচিং বানিজ্য করতেন। তার কাছে কোচিং না করলে, অনেক শিক্ষার্থীকে ফেল করাতেন। ছাত্রীদের রাতে মেসেঞ্জার বা হোয়াটস অ্যাপে কু-প্রস্তাব দিতেন ।
এ সময় এভিজেএম এর এসএসসি-২৪ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা জামানের পিতা মো. ওয়াহিদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘মনোরঞ্জন সূত্রধর খুবই চালাক একজন মানুষ। তার মধ্যে শিক্ষকতার কোন পেশাদারিত্ব নেই। আমার মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলো। মনোরঞ্জনের কোচিংয়ে না পড়ায় ক্লাসে আমার মেয়েকে সবসময় মানসিকভাবে হেনস্তা করতো সে। আমার মেয়ে স্কুলে গেলে সবসময় আতঙ্কে থাকতাম মনোরঞ্জন তার কোনো ক্ষতি করলো কি-না।’
ওই অভিভাবক বলেন, ‘একপর্যায়ে মনোরঞ্জনের অত্যাচারে মেয়েকে অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করাতেও চেয়েছি। ওর মতো মানুষের শিক্ষক পরিচয় দেয়ার অধিকার নেই। দ্রুত একে অপসারণ না করা হলে মুন্সীগঞ্জের এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি তার সুনাম হারাবে। আরও অনেক মেয়ে ভুক্তভোগী হবে।’
অভিযোগ বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক মনোরঞ্জন সূত্রধর বলেন, আমার বিরুদ্ধে স্কুলের কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মিথ্যা অভিযোগ করছে। ‘আমার বক্তব্য এতটুকুই,।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সমস্ত অভিযোগ শুনেছি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগগুলো যৌক্তিক। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ।