সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল: আতঙ্ক নয়, স্বাভাবিক ‘হেয়ারক্র্যাক’ বলছে কর্তৃপক্ষ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৮১ Time View

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটলের ছবি। ছবিগুলো দেখেই অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন—দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল রেলসেতু কি তাহলে ঝুঁকিতে?

কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে, “এগুলো আসল ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে কংক্রিটে ক্ষুদ্র ‘হেয়ারক্র্যাক’ বা সূক্ষ্ম ফাঁকা তৈরি হয়েছে, যা কাঠামোগতভাবে কোনো বিপদ সৃষ্টি করছে না।”

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী নাইমুল হক জানান, “সেতুর প্রায় ৮ থেকে ১০টি পিলারের নিচের অংশে চুলের মতো ক্ষুদ্র চির দেখা গেছে। এটি ০.১ থেকে ০.৩ মিলিমিটার পর্যন্ত ছোট ফাঁকা। নির্মাণ ত্রুটি নয়—এটি প্রাকৃতিকভাবে কংক্রিটের তাপজনিত প্রতিক্রিয়ায় হয়ে থাকে।”

তিনি আরও বলেন, “এই ফাটলগুলো এখনই বিশেষ আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। কোনোভাবেই ট্রেন চলাচলে বা সেতুর স্থায়িত্বে এর প্রভাব পড়বে না।”

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল থেকে ফেসবুকের একাধিক পেজে সেতুর পিলারের ফাটলের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ পোস্টে লিখেন, “নতুন সেতুতে ফাটল!”—এমন শিরোনামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় ও অনলাইন মহলে।

এ বিষয়ে প্রকৌশলী নাইমুল হক বলেন, “কেউ কেউ ছবিগুলো বড় করে প্রকাশ করে জনসাধারণের মাঝে ভয় তৈরি করছেন। বাস্তবে এটি তেমন কিছু নয়—এ ধরনের হেয়ারক্র্যাক বিশ্বব্যাপী কংক্রিট কাঠামোতে স্বাভাবিক বিষয়।”

চলতি বছরের ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু—যমুনা রেলওয়ে সেতু। এতে রেল যোগাযোগে এক নতুন যুগের সূচনা হয়।

১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায় নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মাণ করেছে জাপানের ওটিজি ও আইএইচআই যৌথভাবে। পুরো ব্যয়ের ৭২ শতাংশ অর্থায়ন করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।

সেতুর দুটি লাইনই ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক, যার একটি লাইন দিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

প্রকৌশল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “হেয়ারক্র্যাক কোনো নতুন বিষয় নয়। এটি কংক্রিটের পৃষ্ঠে সূক্ষ্ম রেখা, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাহ্যিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার প্রভাবে তৈরি হয়। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও প্রলেপের মাধ্যমে সহজেই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।”

চরের মানুষ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, “সেতুটা শুধু রেলপথ নয়, এটা উত্তরবঙ্গের প্রাণ। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখে রেল যোগাযোগ অব্যাহত থাকাই আমাদের প্রত্যাশা।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com