জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ, নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার এবং বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় গতকাল এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লৌহজং উপজেলা এবং পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা। উপজেলার মালির অংক বাজারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন বক্তারা, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত মুন্সিগঞ্জ-২ (লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি) সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লৌহজং উপজেলা আমির মোঃ জামাল উদ্দিন স্যার ও পদ্মা সেতু উত্তর থানার আমির মুফতি এস এম আনোয়ার হোসাইন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষজনের উপস্থিতিতে এই বিক্ষোভকে জামায়াতের তৃণমূল পর্যায়ের পুনর্গঠিত শক্তির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বক্তারা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এই পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া জরুরি। তাদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— আগামী ফেব্রুয়ারিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদের’ ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন, এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি চালু করা। বক্তারা যুক্তি দেখান, পিআর পদ্ধতি চালু হলে সংসদে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
জামায়াত নেতারা আরও দাবি জানান, নির্বাচনের আগে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। তাদের চতুর্থ দাবিটি ছিল— ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। তারা অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এসব অভিযোগের নিষ্পত্তি দাবি করেন।
সবচেয়ে কঠোর দাবিগুলোর মধ্যে ছিল পঞ্চম দফাটি— স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। এই দাবিটি সরকারের মিত্র দলগুলোর সাথে জামায়াতের সরাসরি সংঘাতের ইঙ্গিত বহন করে। অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করিম বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে এই আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে জামায়াত। সমাবেশ শেষে একটি সংক্ষিপ্ত পথসভা করে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।