সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় বড়হর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কর্মীসভা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণত ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি গুটিকতক কর্মী-নেতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, অতিথিদের সরব উপস্থিতি আর প্রাণবন্ত পরিবেশ পুরো সভাকে পরিণত করেছে রাজনৈতিক মিলনমেলায়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আরিফুর ইসলাম আরিফ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মোঃ আলামিন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ছানোয়ার হোসেন ছানু। তিনি বলেন, “দলকে শক্তিশালী করতে হলে তৃণমূল কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, তাদের প্রতিটি কণ্ঠস্বরই দলের শক্তি।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী জোয়ার্দার, আব্দুল কাদের তালুকদার রিমন ও মোঃ নাজমুল হক এবং সদস্য শাহরিয়া মামুন রাজু। তারা সবাই আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে কর্মীদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে কর্মীরা দলে দলে উপস্থিত হন। অনেকে নিজস্ব মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এ ধরনের আয়োজন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে উৎসাহিত করে। একজন তরুণ কর্মী বলেন, “আমরা শুধু দর্শক নই, সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকতে চাই। এই ধরনের সভা আমাদের পথ দেখায়।”
বড়হর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষও সভার প্রাণবন্ত পরিবেশ লক্ষ্য করেছেন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “অনেকদিন পর ইউনিয়নে এমন কর্মীসভা দেখলাম। এতে বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো এখন তৃণমূল পর্যায়ে কর্মীদের নিয়ে আবারও সক্রিয় হচ্ছে।”
এদিকে, স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় রাজনীতির অস্থির প্রেক্ষাপটে এ ধরনের কর্মীসভা গ্রামীণ পর্যায়ে নতুন করে দলীয় শক্তি সংগঠিত করার ইঙ্গিত বহন করছে।
বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্রামীণ এলাকায় কর্মীদের একত্রিত করা দলীয় কৌশলের বড় অংশ। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি দল তাদের তৃণমূল ভিত্তিকে মজবুত করতে চাইছে। বড়হর ইউনিয়নের এই সভা সেই প্রস্তুতিরই একটি উদাহরণ।
উল্লাপাড়ার বড়হর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের এই কর্মীসভা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তৃণমূল রাজনীতির প্রাণবন্ত চিত্র। স্থানীয় কর্মীদের অংশগ্রহণ, নেতাদের দিকনির্দেশনা এবং সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা মিলিয়ে এই সভা প্রমাণ করেছে—দলীয় কর্মকাণ্ডে নতুন এক উদ্দীপনার সঞ্চার ঘটছে।