সিরাজগঞ্জ শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ৬০ বছরের পুরোনো ভবন বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনটির ছাদ ও দেয়ালে ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়া এবং বিমের রড বেরিয়ে আসার কারণে যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্টেশনের কর্মীরা।
বর্তমানে এই স্টেশনে ১৬ জন ফায়ার ফাইটারসহ মোট ২৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। ভাঙাচোরা ভবনটি তাঁদের জন্য প্রতিদিনের বসবাস ও কাজের স্থান। স্টেশন ইনচার্জের পরিবারও এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই বসবাস করছে, যা তাঁদের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে।
ফায়ার ফাইটার মহন আলী জানান, “আমরা ঝুঁকি নিয়েই ডিউটি করি। বৃষ্টি হলেই অফিস ও কর্মকর্তাদের কক্ষে পানি পড়ে।” তাঁর এই উদ্বেগের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন কর্মী আবু বক্কর সিদ্দিকী, যিনি বলেন, “মানুষকে সেবা দিই, অথচ নিজেরাই আছি ঝুঁকিতে। জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন প্রয়োজন।”
সচেতন নাগরিকেরা এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দমকলকর্মীদের সেবা কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে। ফলে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
এই ভবনটির বর্তমান অবস্থা কেবল দমকলকর্মীদের জন্যই নয়, বরং পুরো শহরের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি স্বরূপ। একটি জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অবকাঠামো যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তবে তা তাদের কার্যকারিতা এবং সেবার মানকে প্রভাবিত করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের নিরাপদ অবকাঠামো থাকা অত্যন্ত জরুরি। ভবনটি দ্রুত সংস্কার না করলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তা শহরের মানুষের জন্য বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয়গুলোর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, নতুন ভবনের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাঁদের আশা, সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ দ্রুত এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন এবং একটি নিরাপদ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন।