সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচন অফিসে সোমবার (২৫ আগস্ট) এক রোহিঙ্গা দম্পতি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে এসে আটক হন। আটককৃতরা হলেন রোকেয়া বেগম (৩২) ও মো. আনিছ (৩৮)। তারা কক্সবাজারের উখিয়ার টেংখালী ক্যাম্প-১২ জি-৪ থেকে এসেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।
নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে রোকেয়া ও আনিছ ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে ভোটার হওয়ার জন্য অফিসে আসেন। তাদের নাম, ঠিকানা এবং ভাষা সন্দেহজনক মনে হলে বিষয়টি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরবর্তীতে তাদের আটক করে ইউএনও কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনামিকা নজরুল বলেন, “আটক দুজনই রোহিঙ্গা। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সোমবার দুপুরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে।”
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, “উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে আটক রোহিঙ্গা দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
এই ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ সম্পর্কে সচেতন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোহিঙ্গাদের এভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে উদ্যোগী হওয়া দেশের নিরাপত্তা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকতে হবে এবং ভুয়া কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এছাড়া, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ধরনের অনুপ্রবেশের মূল হোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার তাগিদ দেন তারা।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, এভাবে রোহিঙ্গাদের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিশে যাওয়া তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রশাসনকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।