গণঅধিকার পরিষদ নেতার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ- আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা সিরাজগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদ নেতার বাড়িতে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের।
বুধবার (৩০ জুলাই) সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে গণঅধিকার পরিষদ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রহিম বাদী হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলায় গণঅধিকার পরিষদের নেতা আব্দুর রহিমের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ, ভাংচুর ও হামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগের ৫১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ১০০-১৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় অন্যতম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী ও হাবিবে মিল্লাত মুন্নার নাম।
মামলায় আরো আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি হেলাল উদ্দিন এবং সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনকে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতের আঁধারে একটি বিশাল দল আব্দুর রহিমের বাড়িতে আক্রমণ করে এবং ভাঙচুর চালায়। এই হামলার সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যা পুরো এলাকাকে আতঙ্কিত করে তোলে। ঘটনার পরে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিরাজগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এই ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আব্দুর রহিমের পরিবার দাবি করেছে যে, এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাত রয়েছে। তারা এই ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। অপরদিকে, মামলা দায়ের হওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, তাদের দলীয় কর্মীরা এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ অত্যন্ত জরুরি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে যা দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
বিগত সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা বেড়ে চলেছে, যা সমাজের বিভিন্ন স্তরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচার প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু বাস্তবায়নই এই ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।
ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও সংলাপ বৃদ্ধি করা জরুরি।