সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। চারদিকে এখন পূজার আমেজ, সাজসজ্জার রঙিন ছটা আর আনন্দঘন পরিবেশের প্রস্তুতি। সিরাজগঞ্জের গ্রাম থেকে শহর—সবখানেই চলছে উৎসবের তোড়জোড়।
জেলার বিভিন্ন প্রতিমাশিল্পীর আঙিনায় এখন উৎসবের রঙ মিশে আছে মাটির ঘ্রাণে। কাদা, খড়, বাঁশ আর কাঠ দিয়ে শুরু হওয়া প্রতিমা তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। শিল্পীরা দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ ও অসুরকে।
ভদ্রঘাট ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের প্রতিমাশিল্পী সুশীল পাল ব্যস্ত হাতে তুলির আঁচড় দিতে দিতে বললেন উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। লাভ খুব একটা হয় না, তবুও বাপ-দাদার এই পেশা ছাড়তে পারি না। এ বছর ১৫টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। প্রতিটি প্রতিমার দাম ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে।
বছরে একবার প্রতিমা বিক্রির আয় দিয়েই চলে তাদের সংসার। লাভ-ক্ষতির হিসেবের চেয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগিই যেন তাদের কাছে বড়।
জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫২৫টি পূজামণ্ডপে এবার অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা। বাঁশ আর কাপড় দিয়ে তৈরি অস্থায়ী প্যান্ডেলে ঝুলছে আলোকসজ্জার সারি। বাজছে ঢাক-ঢোলের মহড়া, শোনা যাচ্ছে শঙ্খধ্বনি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু জানান আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
উৎসব ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে মোতায়েন থাকবে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী। পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি ও মোবাইল টিমের টহল।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন—কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
পূজা উপলক্ষে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সবাই ঐক্যমতের বার্তা দিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম এক মতবিনিময় সভায় বলেন—শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনই আমাদের লক্ষ্য। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যেন আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব পালন করতে পারে, সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।
এখন শুধু অপেক্ষা দেবীর আগমনের। ঢাক-ঢোলের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সিরাজগঞ্জ জুড়ে ভক্তদের মনে এখন একটাই প্রত্যাশা—শারদীয় দুর্গোৎসব হোক শান্তি, সৌহার্দ্য ও আনন্দের প্রতীক।
সিরাজগঞ্জে শারদীয় দুর্গোৎসব: রঙ-তুলির ছোঁয়ায় শিল্পীর ব্যস্ততা, নিরাপত্তায় কড়াকড়ি
জলিলুর রহমান জনি সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। চারদিকে এখন পূজার আমেজ, সাজসজ্জার রঙিন ছটা আর আনন্দঘন পরিবেশের প্রস্তুতি। সিরাজগঞ্জের গ্রাম থেকে শহর—সবখানেই চলছে উৎসবের তোড়জোড়।
জেলার বিভিন্ন প্রতিমাশিল্পীর আঙিনায় এখন উৎসবের রঙ মিশে আছে মাটির ঘ্রাণে। কাদা, খড়, বাঁশ আর কাঠ দিয়ে শুরু হওয়া প্রতিমা তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। শিল্পীরা দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ ও অসুরকে।
ভদ্রঘাট ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের প্রতিমাশিল্পী সুশীল পাল ব্যস্ত হাতে তুলির আঁচড় দিতে দিতে বললেন উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। লাভ খুব একটা হয় না, তবুও বাপ-দাদার এই পেশা ছাড়তে পারি না। এ বছর ১৫টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। প্রতিটি প্রতিমার দাম ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে।
বছরে একবার প্রতিমা বিক্রির আয় দিয়েই চলে তাদের সংসার। লাভ-ক্ষতির হিসেবের চেয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগিই যেন তাদের কাছে বড়।
জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫২৫টি পূজামণ্ডপে এবার অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা। বাঁশ আর কাপড় দিয়ে তৈরি অস্থায়ী প্যান্ডেলে ঝুলছে আলোকসজ্জার সারি। বাজছে ঢাক-ঢোলের মহড়া, শোনা যাচ্ছে শঙ্খধ্বনি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু জানান আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
উৎসব ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে মোতায়েন থাকবে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী। পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি ও মোবাইল টিমের টহল।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন—কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
পূজা উপলক্ষে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সবাই ঐক্যমতের বার্তা দিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম এক মতবিনিময় সভায় বলেন—শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনই আমাদের লক্ষ্য। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যেন আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব পালন করতে পারে, সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।
এখন শুধু অপেক্ষা দেবীর আগমনের। ঢাক-ঢোলের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সিরাজগঞ্জ জুড়ে ভক্তদের মনে এখন একটাই প্রত্যাশা—শারদীয় দুর্গোৎসব হোক শান্তি, সৌহার্দ্য ও আনন্দের প্রতীক।