ত কয়েক সপ্তাহের তীব্র দাবদাহ আর গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে, ঠিক তখনই উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে আবহাওয়ার বৈপরীত্য লক্ষ করা যাচ্ছে। গোটা উপজেলায় দিনের বেলায় তীব্র গরম ও রাতের বেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে।
সন্ধ্যা হলেই কুয়াশা আর শীত নেমে আসে ভূরুঙ্গামারীতে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করলেও রাতের বেলায় কম্বল বা কাঁথা গায়ে ঘুমাতে হচ্ছে। প্রকৃতি বিচিত্র ধরনের আচরণ করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এতে মৌসুমি রোগবালাই বেড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) ভোরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ধান গাছ আর ঘাসের ডগায় কুয়াশায় শিশির বিন্দু জমে আছে। অনেকেই মোটা কাপড় পড়ে সকালে রাস্তায় হাঁটতে বেড়িয়েছেন। স্কুল শিক্ষক আবু সাঈদ জানান, বৈশাখ মাসের আজ ২৫ তারিখ অথচ সকালে শীত আর কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে এটা পৌষ মাস।
উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের কৃষক মমতাজ আলী জানান, তার সেচ পাম্পে ৬০ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ হয়েছে। জমির ধান পাকতে শুরু করেছে এবং কিছু জমিতে প্রচণ্ড রোদের কারণে প্রায় প্রতিদিনই সেচ (পানি) দিতে হচ্ছে। কিন্তু রাতে যখন জমিতে সেচের পানি দিতে যাই তখন খুব ঠাণ্ডা লাগে। জ্যাকেট বা মোটা কাপড় পরে কাজ করতে হয়। কুয়াশায় ধানগাছের ডগায় শিশির বিন্দু জমে থাকে। এতে করে পরনের জামা কাপড় ভিজে যায়।
বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক ১১ঘটিকার দিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদ আর তীব্র গরম উপেক্ষা করে বহির্বিভাগে অনেক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় কথা হয় নিলুফা ইয়াসমিনের সাথে। তিনি বলেন, সারা দিন তীব্র গরমে বাচ্চারা ঘামে। কিন্তু রাতে আবার ঠাণ্ডা লাগে। আবহাওয়ার এ অবস্থার কারণে তার ২টি সন্তান সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। তাই ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, আকাশে মেঘ থাকলেও মূলত জলীয়বাষ্প বাতাসের গতি শক্তির পরিবর্তনের ফলে মুশুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে না। মুশুল ধারে বৃষ্টি হলে কুয়াশা কেটে যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, এ মুহূর্তে বাচ্চাদের বাইরের কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না। বাচ্চাদের গা ঘেমে গেলে পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। বয়স্কদের কোনো সমস্যা যেমন সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।