ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে পারমথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা। এর মধ্যে এক গ্রামেই রয়েছে ৫টি ভাটা। যার মধ্যে ১৩ টি চলে জিগজ্যাগে, বাকি তিনটি হাওয়ায়। এদের কোনটারই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লাইসেন্স। বিদ্যালয়টির ২০ মিটারের মধ্যেই ৮ বছর ধরে জ্বলছে মেসার্স আসাদ জাহাঙ্গীর ব্রিকস ইটভাটা। ভাটার নির্গত কালো ধোঁয়ায় একাকার হয়ে থাকে বিদ্যালয়ের চারপাশ। তারই মধ্য দিয়ে চলছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের আসা-যাওয়া, পড়াশোনা আর খেলাধুলা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিনিধিদের জানায়, ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় প্রায় বন্ধ হয়ে আসে নিঃশ্বাস। চোখ মেলে তাকানোও যায় না। প্রায়শই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। মুখে ওড়না বা কার্ফ পেঁচিয়ে চলাচল করতে হয় শিক্ষার্থীদের। শুধু শিক্ষার্থী না বেগ পেতে হচ্ছে পথচারীদেরও।
যদিও ২০২১ সালে স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগে প্রশাসন বন্ধ করে দিলেও ভাটার কর্তৃপক্ষ আবার চালু করে দেয়।
এদিকে ভাটা মালিক জাহাঙ্গীর হোসেনের দাবি, অভিযোগের পরে ভাটা অনেকটা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন কাঠের জায়গায় কয়লা পোড়ানো হয়। তাই সমস্যা হবার কথা না।
অন্যদিকে ভায়না ইউনিয়নের তৈলটুপি গ্রামেও একটি মাধ্যমিক ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ভাটা। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানান, প্রশাসনের চোখে ধুলা দিতে সামনে কিছু কয়লা রাখা হয়েছে। মূলত কাঠ দিয়েই গোড়ানো হচ্ছে ইট।
ভাটার মালিকরা জানায়, অত্র এলাকায় একটা ভাটারও ছাড়পত্র বা অনুমোদন নেই। তবে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই ভাটা চালানো হচ্ছে।
পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল হোসেন বলেন, অবৈধ ভাটার কার্যক্রম বন্ধে কাজ করতে গিয়ে হামলাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এর পরও কাজ থেমে নেই।
ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাসির রহমান জানান, গত বছর কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে। কয়েকটির মালিক আদালতে রিট পিটিশন করেছেন। বাকিগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল জানান, যেসব ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, দ্রুত সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।