শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

মুন্সীগঞ্জে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম লালে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপে

লিটন মাহমুদ, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪
  • ৪৩ Time View

“গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে। 

গনগনে রোদ্দুর প্রখর তাপ হয়ে ঝরছে গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে। তপ্ত বাতাস জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে শরীর ও চোখে। আবার এই আগুনঝরা গ্রীষ্মই আমাদের দৃষ্টিতে প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে তার বর্ণিল ফুলের সমারোহে। নগরীর চারপাশের সব রূক্ষতা যেন মলিন হচ্ছে এ রঙের ঝাঁপির মাঝে। চলতি পথে কৃষ্ণচূড়ার গাঢ় লাল দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছে তৃষ্ণার্ত পথিক। আবার কখনও লালের ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে বেগুনি জারুল ফুল। সোনাঝরা সোনালু ফুলের গাছ ঝলমল করছে আপন মহিমায়। এছাড়াও রাধাচূড়া, শিমুল, ভাটফুল, কুরচি, কবরীসহ নানা ফুলের চমৎকার রঙ গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়ে যাচ্ছে। ইট পাথরের ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা নানা প্রজাতির ফুলগুলো তীব্র রোদের ঝলকানিতে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠছে।

মুন্সীগঞ্জে ব্যতিক্রম নয় ।

তীব্র গরমের এই সময়ে প্রকৃতিতে ফুলের দেখা মেলে খুব কমই। তবে রাজশাহী নগরীর ইট পাথরের মধ্যেও গাছের ডাল-পাতার ফাঁকে নানা রঙের ফুল নজর কাড়ছে।নগরীর পদ্মাপাড় ঘেঁষে এখন কৃষ্ণচূড়া ফুলে যেন আগুন লেগেছে। গ্রীষ্মের এই সময়ের আগুন রাঙা ফুল হিসেবে যাকে জানা হয় তা হচ্ছে এই কৃষ্ণচূড়া।

নগরী সবসময়ই নানা ফুলের সমারোহে সাজানো থাকে। কোথাও টগরের কুড়ি, কোথাও রাধাকৃষ্ণের বিচ্ছুরণ। অলকানন্দা, বাগানবিলাশ, ঘাষফুল, টগরের রাজ্যে ঘুরে ঘুরে ফুল ও রঙ একসঙ্গে চিনিয়ে ফেলা যায় অনায়াসে।

গ্রীষ্মের সৌন্দর্য বাড়াতে হাজির স্বর্নাভ-হলুদ সোনাইল বা বান্দরের লাঠি ও বেগুনি রংয়ের মনোমুগ্ধকর জারুল! পাশাপাশি রাধাচূড়া, কুরচি, গুস্তাভিয়া, কাঠগোলাপ, ডুঁলিচাপা, উদয়পদ্ম, পাদাউক, মধুমঞ্জুরী, পেল্টোফোরাম, কমব্রেটাম, পালাম বা পালান, লাল বা গোলাপি সোনালু, নাগেশ্বর, হিজল, লাল ঝুমকো লতা, জ্যাকারান্ডা ইত্যাদি বিভিন্ন রঙিন ফুল শোভা পাচ্ছে প্রকৃতিজুড়ে। গ্রীষ্মের এমন খরতাপেও প্রকৃতির এই রঙিন-রূপ আপনাকে দিয়ে যাবে এক পশলা-শান্তি।

গ্রীষ্মের সবচেয়ে রঙিন ফুলটি বোধ হয় কৃষ্ণচূড়া। এর জাদুকরী রঙের ছটায় মুহূর্তেই রঙিন হয়ে ওঠে প্রকৃতি। গাঢ় লালের এ সমারোহ দেখে মনে হতে পারে, এত কৃষ্ণচূড়া গাছ লুকিয়ে ছিল আমাদের চারপাশে!লালের পাশাপাশি হলুদ ও কমলা রঙের হয় এ ফুল। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়্যা। চমৎকার পত্রপল্লব ও আগুনরঙা ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ এ গাছ। কৃষ্ণচূড়া যে শুধু লাল রঙেরই হয় তা নয়, পাশাপাশি কমলা লাল ও হলুদ রঙেরও হয়। দৃষ্টিনন্দন ফুলগুলোর শোভা বাড়ায় উজ্জ্বল সবুজ রঙের সূক্ষ্ম চিরলপাতা। কৃষ্ণচূড়া গাছের আরেক নাম গুলমোহর। আমাদের দেশে সহজপ্রাপ্য এ গাছটির আদি নিবাস মাদাগাস্কারে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মু্ন্সীগঞ্জ  সদর উপজেলার শিলই, বাংলাবাজার, আধারা, পঞ্চসার, বজ্রযোগীনি, রামপাল, আধারা, বাংলাবাজার, সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক গ্রামে দেখা মিলছে  কৃষ্ণচূড়া গাছ।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। কুড়ি আসার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ভরে যায় ফুলে ফুলে। কৃষ্ণচূড়া ফুল সাত-আটটি পাপড়িযুক্ত গাঢ় লাল। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com