অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৭ সদস্য শপথ নিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন মুন্সীগঞ্জের মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান । তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামের খানবাড়ির সন্তান ।
৮ আগস্ট
(বৃহস্পতিবার ) রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা বঙ্গভবনে শপথ নেন। রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন শপথ পাঠ করান।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নির্বাচন পর্যবেক্ষক শারমিন মুর্শিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুকী আজম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার বি. জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন, ইসলামি চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হাসান, উন্নয়নকর্মী ফরিদা আখতার, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরজাহান বেগম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া।
সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবী আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার কর্মী। তিনি মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছিলেন।
২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে আদিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের হয়। ২০১৩ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে।
ঢাকায় হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেনের মাধ্যমে কানাডা তার মুক্তির আহ্বান জানায়। এছাড়াও বাংলাদেশের অসংখ্য মানবাধিকার কর্মী তার মুক্তির দাবি জানান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি জাফর আহমেদ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে খানকে কারাগারে ডিভিশনের মর্যাদা দিতে সরকারকে নির্দেশ দেন।
২০১৩ সালের অক্টোবরে, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বোরহানউদ্দিন এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের কাছ থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান আদিলুর।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ওই মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খান এবং নাসিরুদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ফ্রান্স ও জার্মানি এই রায়ে দুঃখ প্রকাশ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আইনজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এই রায়ের প্রতিবাদ জানায়।
আদিলুর রহমান ২০১৪ সালে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার, মানবাধিকারের জন্য গোয়াংজু পুরস্কার (২০১৪), ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড এবং মার্টিন এনালস অ্যাওয়ার্ড ফাইনালিস্ট (২০১৪) পুরস্কার লাভ করেন।