শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন

দীর্ঘদিন পর দখল মুক্ত হলো নোয়াখালীর নোফেল ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক, দখল কারীরা ভয়ে পলাতক

আজিজ আহমেদ, নোয়াখালী প্রতিনিধি:
  • Update Time : রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৪ Time View

নোফেল গ্রুপের প্রায় পাচ হাজার  উদ্যোক্তা ও ব্যাংকের অর্থে শত কোটি টাকার দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর দখল মুক্ত হলো। পার্কের পরিচালনা পর্ষদ পার্কের অফিস কক্ষে  এক সভায় এ ঘোষনা দেন।  এই সময় সকল পরিচালক পায় এক শতাধিক বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন। পার্কটি জোরপূর্বক ভাবে চিহ্নিত কিছু দখলবাজ চক্র দখল করে নেয়। তারা এতই শক্তিশালী ছিল কোন মামলা তো দূরের কথা জিডি করতে ও মালিক পক্ষ  সাহস পায়নি। 

ঘটনার বিবরনে ভুক্তভোগীরা জানান, নোফেল গ্রুপ  লিমিটেড এর অধীনে নোফেল এগ্রোফিশারিজ লিমিটেড এর  উদ্যোগে প্রান্তিক খেটে খাওয়া নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও প্রবাসী সহ প্রায় পাঁচ  হাজার গ্রাহক থেকে লভ্যাংশের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিনিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন সুনামের সহিত সহজ কিস্তিতে ফ্ল্যাট, প্লটের মালিক হওয়ার সহজ  শর্তে সুযোগ করে দিয়ে সমাজের আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

একটি জাতি সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, নিরাপদ বাসস্থান খুবই জরুরী বিধায় এই নোফেল গ্রুপ লিমিটেড ফ্ল্যাট, প্লট এর পাশাপাশি নোয়াখালী জেলা বাসির কল্যাণে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য নোফেল ড্রিম ওয়ার্ল্ড (প্রা:) লিমিটেড নামে প্রায় একশত একর জায়গা নিয়ে প্রায় শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করে। যাহা ৫ হাজার উদ্যোক্তার রক্ত ঘাম জড়ানো টাকা। তার মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চৌমুনী শাখা থেকে ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে এ পার্ক চালু করে। যাহা বর্তমানে মূল ঢাকা থেকে বেড়ে তিনগুণ হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায়। উক্ত পার্কটি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী ৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ২০১৫ সালের ১৬ই জুন তারিখে আনুষ্ঠানিক ভাবে  উদ্বোধন করেন। 

এ সময় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র হারুন অর রশিদ আজাদ, জেলা আওয়ামীলীগের উপপ্রচার সম্পাদক একেএম শামছুদ্দিন জেহান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম জিলানী দিদার, মাহমুদুর রহমান জাবেদ, ফখরুল ইসলাম মন্টু  সহ গুরুত্বপূর্ণ শত শত লোক জন  উপস্থিত ছিলেন। 

উক্ত উদ্বোধনের  সংবাদ  প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, যুগান্তর, কালের কন্ঠ, নয়া দিগন্ত, অবজারভার সহ প্রায় ৫০ টিরও বেশী  ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত হয় । এই পার্কের খবর সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে  শিশু কিশোরদের মাঝে আনন্দের বিরাজ করে।

পার্কটি  যখনই জমজমাট হয়ে ওঠে  মানুষের ভিড় জমে তখনই নোয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মধুসূদনপুর নিবাসী মৃত সফি উল্লা এর ছেলে সন্ত্রাসী, দখল চাঁদাবাজ মোঃ গোলাম মুর্তুজা মুন্না তার দলীয় এবং সরকার দলীয়  কিছু নেতাকে নিয়ে নোফেল এগ্রোফিশারিজ লি: এর  কর্মকর্তাদের কিছুদিন থেকে তাদের কাছে ইজারা দেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিতে থাকে। ইজারা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় । 

অবশেষে  বিগত ২০১৭ সালের ১১ই মে নোফেল এগ্রোফিশারিজ লি: এর কর্মকর্তাদেরকে একটি লিখিত রেজুলেশনে সাক্ষর দিতে বাধ্য করে।

এরই  ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৪ই মে তাদের উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে হুমকি ধামকি  দিয়ে মাইজদি বিশাল সেন্টারের মালিক খোকনের অফিসে আটক করে অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন শর্ত ও উল্লেখ্য করে ট্রাম্পে স্বাক্ষর নেয়। চুক্তিপত্রে সাক্ষর নেয়। নোফেল এগ্রোফিশারিজ লিমিটেডের পরিচালকগণ পার্কটিকে  “নোফেল ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক ” নামে পরিচালনা করলেও  এ  প্রতারক চক্রটি “নোয়াখালীর ডিম ওয়ার্ল্ড ” নামক ভুয়া কোম্পানির নামে  দীর্ঘ আট বছর অর্থলুটপাঠ করছে। প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদ মাত্র এক লক্ষ টাকায় অগ্রিম দেওয়ার কথা চুক্তিপত্রে থাকলেও  তা আজও দেয়নি। না দিয়ে  কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ .আর মাসুদ চৌধুরীকে বাধ্য করিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ইজারার নামে দখলে যায়। 

এ ঘটনা প্রায় ৫হাজার গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে জনগণের মাঝে নিন্দার ঝড় বয়ে উঠে। কিন্তু  এ পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা আয় হলেও চুক্তি মোতাবেক লভ্যাংশের কোন টাকা পয়সা দেয়নি। 

এ বিষয়ে কোন মামলা হয়েছে কিনা মাসুদ চৌধুরী কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে অস্ত্রের মুখে স্বাক্ষর দিয়েছি মামলা থাক দুরের কথা জিডি ও করতে সাহস পায় নি।  মুন্নার সাথে তার দলের অস্ত্রধারী ক্যাডার ছাড়াও সরকারী দলের অনেকে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছে। এ বিষয়ে বারবার মুঠো ফোনে চেষ্টা করলেও গোলাম মুর্তুজা মুন্না ফোন ধরেনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী ও কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা অনেকে জানান, এ দখলবাজ  চক্রটি সিএনজি ও ব্যবসায়ীদের থেকে বিভিন্নভাবে চাঁদা আদায় করে। যেও কাউকে দুর্বল পেলে তারা গ্রাস করে। অথচ একসময় ছিল বেবি টেক্সের ড্রাইভার, রাস্তার টোকাই এরা বহু অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। এদেরকে আইনের মুখোমুখি করে রিমান্ডে নিলে বের হতে পারে শত কোটি টাকার অবৈধ অর্থের সন্ধান। গোপনে তদন্ত করলে তার সত্যতা  বেরিয়ে আসবে বলে জানান তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Toroni24 Tv.
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com